মামলা ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে এক ফ্রিল্যান্সারের সাড়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত ৬ ডিবি পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ। সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় গত ১২ মার্চ এক অফিস আদেশে এ নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সিএমপির জনসংযোগ কর্মকর্তা অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার স্পিনা রানী প্রামাণিক জানান, গত ১ মার্চ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সিএমপির অফিস আদেশে ৩ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন জমা দেয়। এর প্রেক্ষিতে সিএমপি কমিশনারের সই করা এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, প্রতিবেদন পর্যালোচয় ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) রুহুল আমিনকে ব্যাখ্যা তলব এবং এসআই (নিরস্ত্র) মো. আলমগীর হোসেন, এএসআই (নিরস্ত্র) মো. বাবুল মিয়া, এএসআই (নিরস্ত্র) মো. শাহ পরাণ জান্নাত, এএসআই (নিরস্ত্র) মইনুল হোসেন, কনস্টেবল মো. জাহিদুর রহমান, কনস্টেবল আব্দুর রহমানের (সাময়িক বরখাস্ত) বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর বায়েজিদ থানাধীন গুলবাগ আবাসিক এলাকার বারাকা এন্টারপ্রাইজ নামের কুলিং কর্নারে চা পান করার সময় আবু বকর সিদ্দিক নামের এক ফ্রিল্যান্সারকে আটক করে ডিবি পরিদর্শক মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে একটি দল।

প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায়, আবু বকরকে ডিবি কার্যালয়ে আটকে রেখে হাতের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে মোবাইলের লক খুলেছিলেন পুলিশ সদস্যরা। এরপর তার মোবাইল থেকে দুটি ব্যাংকে অ্যাকাউন্টের ৫ লাখ করে ১০ লাখ টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়। এছাড়া তার বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লাখ ৭৭ হাজার ডলার (প্রায় ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা) স্থানান্তর করা হয়েছে।

অনলাইনে জুয়া খেলার অভিযোগে পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলা করে আবু বকর সিদ্দিককে আদালতে পাঠায় ডিবি পুলিশ। জরিমানা দিয়ে আদালত থেকে তিনি মুক্তি পান। ২ মার্চ আবু বকর সিদ্দিককে পলাতক দেখিয়ে এবং গোয়েন্দা পুলিশের দুই সোর্স মো. কাউসার আহম্মদ এবং শাহাদাত হোসেনকে আসামি করে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের অভিযোগে বায়েজিদ থানায় মামলা করেন ডিবির এসআই মো. আলমগীর হোসেন। সোর্স মো. কাউসারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

অন্যদিকে আবু বকরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগে গত ৫ মার্চ ৮ পুলিশ সদস্যসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন আবু বকরের স্ত্রী হুসনুম মামুরাত লুবাবা। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

সূত্রঃ ইত্তেফাক