গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার দুটি পরিবারের সদস্যদের ওপর নৃশংস হামলার অভিযোগে গ্যাং গ্রুপ ‘ডি কোম্পানি বা ডেয়ারিং কোম্পানি’র পৃষ্ঠপোষক রাজিব চৌধুরী বাপ্পী ওরফে লন্ডন বাপ্পীসহ ১২ সদস্যকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শনিবার রাতে র‌্যাব-১ তাদের গ্রেপ্তার করে। রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘ডেয়ারিং কোম্পানির পৃষ্ঠপোষক বাপ্পী লন্ডনে পড়ালেখা করত। ২০১৩ সালে সে দেশে ফেরে। এরপর ২০১৬ সাল থেকে ডিয়ারিং গ্রুপের কার্যক্রম শুরু করে। গ্রুপের সদস্যদের উত্তরা ও টঙ্গী এলাকায় আতঙ্ক সৃস্টি করেছিল।

আধিপত্য বিস্তারে মারামারি, ছিনতাই, চুরিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তাদের একটি ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে। গ্রুপের মাধ্যমে সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করত। বাপ্পী প্রত্যেক সদস্যকে সপ্তাহে ৩-৪শ’ টাকা দিত। বাপ্পীর ছোটো ভাই পাপ্পু তাকে সহযোগিতা করত। একটি মারামারি ঘটনায় পাপ্পু এখন জেলে।’

তিনি আরও জানান, ২০০৭ সালে বাপ্পীর মা মারা যায়। এর পর তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এতে তাদের পারিবারিক ঝামেলা শুরু হয়। তখন কিশোর গ্যাংয়ে জড়িয়ে পড়েছিল বাপ্পী।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, গত ১ জুন রাত সাড়ে ৯টার দিকে গ্যাং গ্রুপ ‘ডি কোম্পানি’র কয়েকজন সদস্য টঙ্গী পুর্বথানাধীন আরিচপুরের ভুইয়াপাড়া জামে মসজিদের সামনে তুহিন আহম্মেদ ও তুষার আহম্মেদ নামে দুজনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এ ঘটনায় তুহিন বাদী হয়ে টঙ্গী পুর্ব থানায় মামলা করেন। মামলায় করাই গ্যাংয়ের সদস্যরা আরও ক্ষুব্ধ হয় এবং তুহিনের বাড়িঘর ও দোকান ভাংচুর চালায়। ৩ জুন রাতে গ্যাংয়ের সদস্যরা আরিচপুরের একটি দর্জি দোকানে হামলা চালায়। এ সময় তারা চাপাতি দিয়ে আরজু মিয়া, সুজন মিয়া ও সুজনের স্ত্রী রুপালীকে কুপিয়ে জখম করে। এলাকাবাসীর মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। র‌্যাব-১ ওই মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে।

পরে শনিবার রাতে টঙ্গী ও উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পৃষ্ঠপোষক রাজিব চৌধুরী বাপ্পি (৩৫) ও মাঠপর্যায়ের নেতৃত্বদানকারী মইন আহমেদ নীরব ওরফে ডন নীরবসহ (২৪) ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অপর ১০ জন হলো-তানভীর হোসেন ওরফে ব্যাটারি তানভীর (২৪), পারভেজ ওরফে ছোটো পারভেজ (১৯), তুহিন ওরফে তারকাটা তুহিন (২১), রাজিব আহমেদ নীরব ওরফে টম নীরব (৩০), সাইফুল ইসলাম শাওন (২৩), রবিউল হাসান (২০), শাকিল ওরফে বাঘা শাকিল (২৮), মাহফুজুর রহমান ফাহিম (২২), ইয়াছিন আরাফাত ওরফে বিস্কুট ইয়াছিন (১৯) ও ইয়াছিন মিয়া ওরফে প্রিন্স ইয়াছিন (১৯)। তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি চাপাতি, দুটি রামদা ও ছুরি জব্দ করা হয়েছে। র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, তার মাদক সেবন, ইভটিজিং, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত।

এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্নীল ভিডিও শেয়ারসহ নানা ধরণের অনৈতিক কাজেও লিপ্ত তারা।

সূত্রঃ সমকাল