বলিউডের আর অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা হলেন সুনীল শেঠি। ৯০ এর দশকে একের পর এক হিট ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। তার দৌড় কিন্তু এখনো থেমে যায়নি চুল দাড়ি পাকলেও এখনো তিনি দাপটের সাথে অভিনয় করছেন। “আন্না” খ্যাত সুনীলের লুক স্টাইল সবার চেয়ে ভিন্ন। আর সুনীল শেঠি বলিউডের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী অভিনেতা, তার অনেকগুলি রেস্টুরেন্ট রয়েছে।

সুনীল শেঠি

অনেকেই হয়তো চেনেন না সুনিল শেঠির স্ত্রীকে বা তার পেশা কি জানেন না।সুনীল শেঠির স্ত্রী মানা শেঠি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। মূলত ব্যবসা থেকেই প্রচুর অর্থ উপার্জন করছেন তিনি।

সুনীল শেঠির স্ত্রী মানা শেঠি

মানা শেঠি

একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে মুম্বাইয়ে তার অনেক নামডাক রয়েছে। তাই তাকে বলা হয় বলিউডের ‘লেডি আম্বানি’! কারণ রিলায়েন্সের কর্ণধার মুকেশ আম্বানি পত্নীর তুলনায় তার সম্পদ কম নয়।

রিয়েল এস্টেট মুম্বাই এবং তার সংলগ্ন এলাকায় বেশ নাম ডাক রয়েছে মানার। স্বামী সুনীল শেঠির থেকেও কোটি কোটি টাকার আয়, মানা একজন সমাজ কর্মীও। মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাবা ও বোন ইশার সাহায্য নিয়ে একটি ফ্যাশন ব্র্যান্ড খুলেছিলেন।

তবে শুধু ব্যবসা নয়, একাধিক এনজিওর সঙ্গেও যুক্ত তিনি। মানা তার স্বামী সুনীল শেট্টির সঙ্গে ‘S2 Realty & Developers’ নামের একটি রিয়েল এস্টেট ফার্ম খুলেছেন। এই ফার্মের মাধ্যমে মুম্বাইজুড়ে ২১টি বিলাসবহুল ভিলা তৈরি করে ফেলেছেন মানা। ৬৫০০ বর্গফুট জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে একেকটি ভিলা। প্রতিটি ভিলার ভেতরে দামি দামি আসবাবপত্রসহ সমস্ত আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে।

সুনীল শেঠি

ব্যবসার পাশাপাশি সামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গেও জড়িত মানা। ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ নামের একটি এনজিওর সঙ্গে জড়িত তিনি। যেখানে দরিদ্র শিশুদের উন্নতির জন্য কাজ করা হয়। এই দাতব্য সংস্থার জন্য মানা নিয়মিত তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

এছাড়া মুম্বাইয়ের বিভিন্ন শহরজুড়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করে সেখান থেকে সংগৃহীত অর্থ ‌তিনি অভাবী মহিলাদের হাতে তুলে দেন।

সুনীল শেঠি

১৯৯১ এ বিয়ে হয় সুনীল এবং মানার। ঠিক তার পরের বছরেই বলিউডে পা রাখে অভিনেতা। বিয়ের আগে অবশ‍্য ৯ বছর চুটিয়ে প্রেম করেছেন দুজনে। পরবর্তীকালে এক সাক্ষাৎকারে নিজেদের প্রেম কাহিনি তুলে ধরেছিলেন সুনীল। তখনি তিনি জানিয়েছিলেন, প্রথম দেখাতেই মানাকে মন দিয়ে বসেছিলেন তিনি।

কীভাবে প্রেম হয়েছিল দুজনের?

সুনীল জানিয়েছিলেন, ধাপে ধাপে এগিয়েছিলেন তিনি। প্রথমে মানার বোনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেন তিনি। তারপর বোনের মাধ‍্যমেই বন্ধুত্ব করেন মানার সঙ্গে। তিনি জানিয়েছিলেন, নিজের এক বন্ধুকে পার্টির আয়োজন করে মানাকেও আমন্ত্রণ জানাতে বলেছিলেন তিনি। একসঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়ে গিয়েছিল। বাইকে করে ঘুরতেও গিয়েছিলেন দুজনে। ধীরে ধীরে একে অপরের প্রতি আকর্ষণটা বুঝতে পেরেছিলেন তাঁরা।

সুনীল শেঠি ও মানা শেঠি

কিন্তু প্রেমটা খুব একটা সহজ হয়নি সুনীল মানার কাছে। কারণ দুজনের ধর্ম ছিল আলাদা। অভিনেতা জানিয়েছিলেন, মানার বাবা ছিলেন গুজরাটি মুসলিম আর মা পঞ্জাবি। অন‍্যদিকে সুনীল দক্ষিণ ভারতীয়। দুজনের সংষ্কৃতি থেকে জীবনযাত্রার ধরণও খুব আলাদা ছিল। তাই সম্পর্কের ভবিষ‍্যৎ নিয়ে চিন্তায় ছিলেন তাঁরা। যদিও সুনীল জানান, তাঁর বাড়ি থেকে শেষমেষ মেনেই নিয়েছিলেন মানাকে। ৯ বছর অপেক্ষার পর ধর্ম পরিবর্তন করে তারপর বিয়ে হয়েছিল সুনীল মানার।

সুনীল শেঠি ও তার পরিবার

বিবাহিত নায়ক হিসাবে বলিউডে পা রেখেছিলেন সুনীল। আশির দশকে ইন্ডাস্ট্রির অন‍্যতম সুপারস্টার ছিলেন তিনি। নায়ক থেকে খলনায়ক, কমেডি থেকে সিরায়াস সব ধরণের চরিত্রেই দর্শক দেখেছে তাঁকে।

তথ্য সূত্র- সংগৃহীত