রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সংঘর্ষ হয়েছে। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দলটির নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজায় বাধা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা, গ্রেপ্তার নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে এ সংঘর্ষ হয়।
পুলিশ বলছে, পূর্ব অনুমতি না নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করায় বাধা দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে ককটেল বিস্ফোরণসহ ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবে জামায়াতে ইসলামী দাবি করেছে, মিছিলে পুলিশ অতর্কিত রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এদিকে নাশকতার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেছে পুলিশ। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় আরও এক বা একাধিক মামলা করা হতে পারে।
জানা গেছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজার থেকে শুরু হয়। এ সময় মিছিলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান, ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী পূর্বের সভাপতি তাকরিম হাসানসহ জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
মিছিলটি শুরুর পর পুলিশ তাদের কাছে জানতে চায়, পূর্ব অনুমতি না নিয়ে এ ধরনের কর্মসূচি কেন পালন করা হচ্ছে। এ সময় জামায়াতের নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর চড়াও হলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পরে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ডিএমপির ডেমরা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মধুসূদন দাস প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, নাশকতার উদ্দেশ্যে কোনো পূর্ব অনুমতি ছাড়াই জামায়াত ইসলামীর শত শত নেতাকর্মী মিছিল বের করে। পুলিশ মিছিলে বাধা দিতে গেলে তারা চড়াও হয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে। ইটপাটকেল ছুড়তে ছুড়তে একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করে।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুর রহমান বলেন, নাশকতার উদ্দেশ্যে জামায়াতে ইসলামী মিছিলটি বের করে। যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মধ্যে ঢাকার বাইরের বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীও রয়েছে।
এদিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। বিবৃতিতে বলা হয়, মিছিল শেষে সমাবেশে অতর্কিত হামলা, গুলিবর্ষণ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। তারা ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা থেকে অসংখ্য নেতাকর্মীকে আটক করেছে।
সূত্রঃ প্রতিদিনের বাংলাদেশ
Aninda, Sub-Editor