রাজধানীর মিরপুরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে চলা সংঘর্ষ থেমে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে দুপুরে সংঘর্ষের সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, মিরপুরের ৬ নম্বর সেকশন বাজারের পশ্চিম পাশে মুকুল ফৌজ মাঠে সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার সময় বাধার মুখে পড়েন দলটির নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের লাঠিপেটা করেন এবং ধাওয়া দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার পর প্রথমে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে বিএনপি নেতাকর্মীরাও একত্রিত হয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়। উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এখন পরিস্থিতি থমথমে। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, ‘পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার এ সমাবেশ হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীসহ তারা সমাবেশস্থলে যাচ্ছিলেন। আগে থেকে অবস্থান নেওয়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অস্ত্রসহ হামলা চালায়।’ তিনি কোনো রকম রক্ষা পেয়েছেন বলে জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপির সমাবেশের অস্থায়ী মঞ্চ তৈরিকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ি হয়। এ ঘটনায় ঘণ্টাব্যাপী যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে ধীরে-ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, আমাদের তিনটি স্থান পরিবর্তন করে দুপুর ১টার দিকে মিরপুর-৬ রোডের কাঁচাবাজারের সামনে প্রশাসন মঞ্চ তৈরির অনুমতি দেয়। তখন আমরা মঞ্চ তৈরি কাজ শুরু করলে চারদিক থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা করে। তখন আমাদের নেতাকর্মীরাও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এ ঘটনায় আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। অনেকে পাশের হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে দাবি করে আমিনুল হক বলেন, ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, বরং বিএনপির নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও গুলি নিক্ষেপ করেছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, বিএনপির সমাবেশস্থলের পাশে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে নিয়ে আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে যাওয়ার পথে বিএনপি নেতাকর্মীরাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।
এদিকে, হামলার প্রতিবাদে বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল করেছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আমান উল্লাহ আমান, আমিনুল হক, নাজিম উদ্দিন আলম, রওনকুল ইসলাম টিপুসহ নেতাকর্মীরা। মিরপুর ১৩ নম্বর সেক্টরে বিক্ষোভ করেন তারা।
এদিকে, যেখানে সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, গণপরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি ও পুলিশের গুলিতে ভোলায় নুরে আলম, আবদুর রহিম ও নারায়ণগঞ্জে শাওন হত্যার প্রতিবাদে সারা দেশের পর ঢাকার ১৬টি স্পটে সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।
এখন পর্যন্ত চারটি স্পটে সমাবেশ হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরার কামারপাড়া সমাবেশেও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করেছে।
Aninda, Sub-Editor