মাদারীপুরে বিএনপি নেতার কবল থেকে দখলমুক্ত হলো দুই বাংলার (বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ) জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটা।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা প্রশাসন বাড়িটি উদ্ধার করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে অভিযুক্ত।
জানা গেছে, কথাসাহিত্যিক সুনীলের বাড়ি দখল হলে জেলাজুড়ে শুরু হয় আলোড়ন। বিষয়টি নজরে আসলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসনও। এই ঘটনায় দায়ী বিএনপি নেতার বিচার দাবি করেছেন জেলার কবি, সাহিত্যিক ও লেখকরা। অভিযুক্ত সোহেল হাওলাদার কালকিনি উপজেলা (বর্তমানে ডাসার উপজেলা) বিএনপির সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক। তার বাড়ি কাজীবাকাই ইউনিয়নের পাথুরিয়ারপাড় এলাকায়।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সোহেল হাওলাদারের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। গত শনিবার মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামের সুনীলের পৈতৃক ভিটা দখলে নেয় উপজেলা বিএনপির সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক সোহেল হাওলাদার। সেখানে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ছবি, বই, স্মৃতিচারণ নষ্ট ও ভাঙচুরেরও অভিযোগ ওঠে।
কাজীবাকাই ইউনিয়নের ওএমএসের ডিলার হওয়ায় সেখানে তিনি চালের গুদাম করেন। এছাড়া লেখকের বাড়ির সামনে জেলা প্রশাসকের দেওয়া সাইনবোর্ডও ভেঙে সরিয়ে ফেলা হয়।
খবর পেয়ে ঘটনার তিনদিন পর বাড়িটি দখলমুক্ত করে প্রশাসন। এমন ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন জেলার সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাহিত্যপ্রেমীরা। বিচার দাবি করেন দখলদারের।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ জানান, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটা এরইমধ্যে দখলমুক্ত করা হয়েছে। যদি কেউ এই জায়গার মালিকানা দাবী করে, তাহলে আদালতে মামলা করে আসতে হবে। আর অবৈধভাবে যে বা যারা দখল করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা
গ্রহণ করবে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, ১৯৩৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মাদারীপুর মহকুমার রাজৈরের আমগ্রামের মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সুনীল। তার পৈতৃক ভিটা পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে। দেশভাগের পর ভারতে চলে গেলেও মাটির টানে তিনবার পৈতৃকভিটায় ছুটে আসেন তিনি। তাকে স্মরণে ২০০৪ সালে সুনীল সাহিস্য চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হলেও সেটিরও আলোর মুখ দেখেনি। ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর কলকাতায় পরলোক গমন করেন খ্যাতিমান এই সাহিত্যিক।
সূত্রঃ ইত্তেফাক