বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকারী সাংবাদিকদের মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সহায়ত প্রদান করতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো ‘ ব্রেদিং আউট বার্ডেন’ বা ‘ভারমুক্তি’র নিঃশ্বাস’ শীষর্ক দিনব্যাপি কর্মশালার।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে কর্মরত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সংগঠন বিজেআইএম, কাউন্টার ফটো- আ সেন্টার ফর ভিজ্যুয়াল আর্টস, ইন্টারনিউজ নেটওয়ার্ক এবং মনের বন্ধুর যৌথ সহায়তায় কর্মশালাটি আয়োজিত হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের রক্তঝরা দিনগুলিতে সম্মুখপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ছবি, চলচ্চিত্র ও শব্দের মাধ্যমে সংবাদ সংগ্রহে সম্মুখসারীতে থাকা সাংবাদিকদের অনেকেই গুরুতর ট্রমা এবং পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD) সহ উল্লেখযোগ্য মানসিক স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন সাম্প্রতিক দিনগুলোতে। প্রায়শই তারা এই মানসিক চাপ বয়ে বেড়াচ্ছেন নিজের অজান্তেই। এসকল সাংবাদিকদের মানসিক চাপ মোকাবিলা করে সুস্থ চিন্তা ও সাংবাদিকতার মত গুরত্বপূর্ন দায়িত্বপালনে সাহায্য করার লক্ষ্যেই আয়োজন করা হয় ‘ভারমুক্তি’র নিঃশ্বাস’ কর্মশালাটি ।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪) কাউন্টার ফটো’র মিরপুর ক্যাম্পাসে আয়োজিত দুটি ভাগে কর্মশালাটি পরিচালনা করেন মনের বন্ধু’র মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কাউন্টার ফটো দ্বারা আয়োজিত এবং বিজেআইএম-এর সমন্বয়ে পরিচালিত কর্মশালাটি আয়োজনে সহযোগিতা করেছে ইন্টারনিউজ নেটওয়ার্ক। দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে ৫০ জন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন যারা সরাসরি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংবাদ সংগ্রহ করেছিলেন।
বিজেআইএমের আহ্বায়ক স্যাম জাহান বলেন- “সাংবাদিকদের অনেকেই আমরা মানসিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার গুরুত্ব বা পিটিএসডি দীর্ঘদিন ধরে বহন করলে কী সমস্যা হতে পারে তা বুঝতে পারি না। এই কর্মশালাটি সাংবাদিকদের মানসিক চাপ লাঘব করার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল। আমরা ভবিষ্যতে আমাদের সহকর্মীদের জন্য আরও এ ধরণের সেশন আয়োজনের চেষ্টা করব,।”
কাউন্টার ফটো’র অধ্যক্ষ সাইফুল হক অমি বলেন- “আমাদের কাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো সহিংসতা, অত্যাচার এবং মানুষের প্রতি অমানবিক কাজের সম্মুখীন হওয়া। এবং আমাদের দায়িত্ব হলো যখনই এইসব ঘটনা ঘটে তা নথিভুক্ত করি। সব সময় আমরা উপলব্ধি করতে পারি না এই ধরনের ঘটনা আমাদের মনস্তত্বে আঘাত রেখে যায়, দীর্ঘমেয়াদে যা ক্ষতিকার পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। আমাদের দায়িত্ব হলো বাস্তবতা স্বীকার করা এবং আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া।”
ইন্টারনিউজ নেটওয়ার্কের বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ শামীম আরা শিউলী বলেন “আমরা এই ধরণের গুরুত্বপূর্ন উদ্যোগের অংশ হতে চেয়েছিলাম কারণ অনুভব করেছি এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা অনেকেই সংবাদমাধ্যমে ভয়াবহতার খবর এবং ছবি দেখে মর্মাহত হয়েছি। আমরা হয়তো কল্পনাওকরতে পারবোনা, যারা সরাসরি মাঠে কাজ করেছেন তাদের জন্য কতটা কঠিন ছিল দায়িত্বপালন করা।
আমি আশা করি এই কাউন্সিলিং সেশন অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকরাদের মানসিক চাপ কিছুটাও লাঘব করবে,””এই মুহূর্তে প্রত্যেকেরই আরও মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রয়োজন, বিশেষ করে সাংবাদিকদের। মনের বন্ধু সবসময় তাদের জন্য নির্ভরতার জায়গা হিসেবে থাকবে,” যুক্ত করেন মনের বন্ধুর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও তৌহিদা শিরোপা।
সূত্র ও ছবি: বিজেআইএম