ডিজিএফ আই এর মাধ্যমে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে মোহাম্মদ সাইফুল আলমের মালিকানাধীন এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক দখলে নেয় বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মান্নান।শুক্রবার ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের আয়োজনে ‘ব্যাংকিং খাতে দখলদারত্ব উচ্ছেদ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এ কথা বলেন তিনি।

২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ভোরে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) কয়েকজন কর্মকর্তা ইসলামী ব্যাংকের তৎকালীন এমডি আবদুল মান্নানকে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে কচুক্ষেতে ডিজিএফআই কার্যালয়ে নিয়ে যান। একইভাবে নিজ নিজ বাসা থেকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানকে তুলে নেওয়া হয়। এরপর তাদের জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে ব্যাংকটি দখলে নেয় এস আলম গ্রুপ।

পদত্যাগপত্রে জোর করে সই নেওয়া হয় বলে দাবি করে আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমাকে ইসলামী ব্যাংকের একটি প্যাডে সই করানো হয়।

কিন্তু সেই প্যাড ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে চলতি ২০২৪ সাল পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক কখনই ব্যবহার করেনি। এই ধরনের একটি প্যাডে আমার পদত্যাগপত্র নেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ওই দিন (৫ জানুয়ারি, ২০১৭) অনেক রাত পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের স্যাররা অফিস করেছেন। তারা ওই দিনই ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনের কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করতে কাজ করেছেন। এগুলো কীভাবে হতে পারে একটি দেশের ব্যাংক খাতে। যে ব্যাংক খাত একটি দেশের অর্থনীতির প্রাণ।’

এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে আবদুল মান্নান বলেন, ‘পরের কয়েক বছর তাদের টেলিফোনে (এস আলম গ্রুপ) বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের অনেক সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, যাতে ভবিষ্যতে এমনটা ঘটানোর কেউ সাহস না পায়।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)–এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘ব্যাংক ও আর্থিক খাতে প্রতারণা ও দুর্বৃত্তায়নের মূল কারণ হিসেবে নষ্ট ও পচা রাজনীতি দায়ী। ইসলামী ব্যাংক দখলের পেছনে রাজনৈতিক কারণ ও রাজনীতিকদের নির্দেশ ছিল।’

ইসলামী ব্যাংক দখলে সাবেক রাষ্ট্রপ্রধানের সরাসরি নির্দেশনা ছিল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান তাদের প্রতিনিধি হিসেবে এস আলম গ্রুপকে ইসলামী ব্যাংক দখল করতে সরাসরি নির্দেশনা দেয়।ফলে রাজনীতি জনকল্যাণমূলক না হলে কোনো কিছুই ঠিক হবে না।’

এছাড়াও ফিন্যান্সিয়াল এক্সিলেন্সের চেয়ারম্যান মামুন রশীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অ্যাডজ্যাংক্ট প্রফেসর মো. মিজানুর রহমান আলোচনায় অংশ নেন। ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক মনির হায়দার।

সূত্রঃ মানবজমিন