সারা দেশে চলছে কোটা আন্দোলনকারীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকেই কর্মসূচি পালনে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সড়কে নেমেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

এদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও। এরপরও বেশকিছু জায়গায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সড়ক দখলে নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

রাজধানীর উত্তরা, শনির আখড়া, কাজলা ও যাত্রাবাড়ী, মেরুল বাড্ডাসহ আরও কিছু জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আবার কোথাও কোথাও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ এখনো চলছে বলেও জানা গেছে।

রাজধানীর উত্তরায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং পরবর্তীতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ছত্র ভঙ্গ করতে রাবার বুলেট কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। আহত হয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকায় আন্দোলনে নামেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়টির কয়েকশ শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে রাস্তা অবরোধ করে এই আন্দোলন শুরু করেন।

এ সময় আন্দোলনের কারণে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পিছু হটলেও পরে পুলিশের দিকে তেড়ে আসেন তারা। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন, একপর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ফাটায়। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভেতরে অবস্থান করছেন।

বেলা ১১টার দিকে শনির আখড়া এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে যাত্রাবাড়ীর দিকে আসার চেষ্টা করেন। এ সময় তাদের ঠেকাতে সংঘর্ষ বাধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে। ছোড়েন কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড।

যাত্রাবাড়ীতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজা এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ছিলেন। অপরদিকে কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। এ সংঘর্ষ শনির আখড়া থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে রাজধানীর প্রগতি সরণি বসুন্ধরা গেটের সামনে থেকে নর্দ্দা, নতুন বাজার পর্যন্ত আন্দোলন করছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রগতি সরণি সড়ক দখলে নেওয়া চেষ্টা করছেন কয়েকশ শিক্ষার্থী। পুলিশও তাদের ঠেকাতে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ছে।

এ ছাড়াও সাইন্স ল্যাবরেটরি এলাকাতেও কোটা আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ছে আন্দোলনকারীরা। পুলিশও তাদের দিকে ছাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ছে।

মিরপুর ১০ নম্বর চত্ত্বরেও সংঘর্ষ চলছে। সকাল থেকেই সেখানে অবস্থান নিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয় কোটা আন্দোলনকারীরা। তাদের ঠেকাতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

গত বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আসিফ মাহমুদ।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর হামলার প্রতিবাদ, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত ও একদফা দাবিতে ১৮ জুলাই সারাদেশে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করছি।’

আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘শুধু হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ব্যতীত কোনো প্রতিষ্ঠানের দরজা খুলবে না, অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত সড়কে কোনো গাড়ি চলবে না। সারা দেশের প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাচ্ছি আগামীকালকের কর্মসূচি সফল করুন।’

সূত্রঃ কালবেলা