কিংবদন্তি,অভিনয়ের বাদশাহ, সম্রাট ইত্যাদী যেই বিশেষণটাই তার জন্য ব্যাবহার করা হোক না কেন তাও কিছু ঘাটতি রয়ে যাবে। এমনি একজন গুণী অভিনেতা যাকে আমরা হারিয়েছি, এখনও পূরণ হয়নি তার শূণ্যতা এবং তা হবারও নয়। কারণ হুমায়ুন ফরীদিতো একজনই।
২০১২ সালে এই দিনে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি। প্রতি বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি সবাই ফাল্গুনের উৎসবে মেতে থাকলেও তার ভক্তদের মনে একটা শূন্যতা ঠিকই নাড়া দেয়। আজ তার নবম মৃত্যুবার্ষিক।
চলচ্চিত্র, মঞ্চ ও টেলিভিশনে হুমায়ুন ফরীদি ছিলেন জনপ্রিয়। তাকে বলা হতো অভিনয়ের কারিগর। বাংলাদেশের নাট্য ও সিনেমা জগতে তিনি অসাধারণ ও অবিসংবাদিত চরিত্রে অভিনয়ের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই গুণী অভিনেতাকে স্মরণ করে থাকেন।
হুমায়ুন ফরিদী ছিলেন শক্তিমান একজন অভিনেতা। যিনি নিজের চরিত্রকে অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলতেন দর্শকদের সামনে। দাপটের সঙ্গে খল চরিত্রে অভিনয় করলেও ইতিবাচক চরিত্রেও তার অভিনয় ছিল প্রশংসনীয়। শুধু সিনেমা নয়, টেলিভিশন নাটক এবং মঞ্চেও তার অভিনয় দেখার জন্য মুখিয়ে থাকতেন দর্শকরা।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন বাংলাদেশে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। যুদ্ধে যোগ দেন তিনিও। যুদ্ধ শেষে স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি তার পড়াশুনা সম্পন্ন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে তিনি সেলিম আল দীন সহচার্যে আসেন।
সেলিম আল দ্বীনের ‘শকুন্তলা’ নাটকের তক্ষক চরিত্রে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৮২ সালে তিনি ‘নীল নকশার সন্ধানে’ নাটকে অভিনয় করেন। এটি ছিল তার প্রথম টেলিভিশন নাটক। এরপর অভিনয় করেছেন ‘ভাঙ্গনের শব্দ শোনা যায়’, ‘সংশপ্তক’, ‘দুই ভাই’, ‘শীতের পাখি’ এবং ‘কোথাও কেউ নেই’- এর মত দর্শকপ্রিয় নাটকে।
‘হুলিয়া’, ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামলছায়া’, ‘একাত্তরের যিশু’, ‘আনন্দ অশ্রু’-সহ অনেক সিনেমাতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তার সর্বশেষ সিনেমা ‘মেহেরজান’।