সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তির এক মাস পর স্বজনদের সাথে মিলিত হলেন নাবিকরা। তাদের দীর্ঘদিন পর কাছে পেয়ে অনেক স্বজন কেঁদে ফেলেন। নাবিকদের বরণ করতে তাদের কারো হাতে ছিল ফুল, কারো হাতে কেক।

নাবিকদের উৎকণ্ঠা কেটে যেতেই উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনায় পরিবারের স্বজনরা বরণ করে নেন তাদের। মুক্ত হওয়া নাবিকদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় চট্টগ্রাম বন্দর কতৃর্পক্ষ।

মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল-১ (এনসিটি) নম্বরে এসে পৌঁছান নাবিকরা। সেখানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নাবিকদের নিয়ে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তাদের বরণ করতে উপস্থিত হন স্বজনরা। পাশাপাশি কেএসআরএমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত হন।

এমভি আবদুল্লাহর চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের ছোট ভাই আবদুর নূর খান আসিফ বলেন, আমার বড় ভাই আর আমরা যে কতটা খুশি, তা ভাষায় বোঝাতে পারব না। পরিবারের সবাই এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম।

কেএসআরএমের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, অবশেষে শুভক্ষণ এসেছে। জাহাজের নাবিকরা বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রামে ফিরেছেন। তাদের বরণ করে নিতে পরিবারের অনেকেই এসেছেন। সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান শেষে নাবিকেরা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাবেন। তাদের বাড়ি ফিরতে যেন কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি না হয় তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মুক্তিপণ পাওয়ার পর গত ১৩ এপ্রিল রাতে জলদস্যুরা এমভি আব্দুল্লাহ থেকে নেমে যায়। এরপর জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূল থেকে আরব আমিরাতের পথে রওনা দেয়।

২১ এপ্রিল এমভি আবদুল্লাহ সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছে। সেখানে কয়লা খালাস করে জাহাজটি একই দেশের মিনা সাকার থেকে আবার কার্গো লোড করে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেয়।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কুতুবদিয়ায় পৌঁছে এমভি আব্দুল্লাহ। সেখানে সাড়ে ১০ হাজার টন চুনাপাথর আনলোড করা করার কাজ চলছে।

এর আগে কয়লা নিয়ে আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ দুপুরে এমভি আবদুল্লাহকে পণবন্দী করে সোমালি দস্যুরা। অস্ত্রের মুখে দস্যুরা জাহাজের ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখে। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর জাহাজের মালিকপক্ষের তৎপরতায় সমঝোতা হয় জলদস্যুদের সাথে। মুক্তিপণ বুঝে নেয়ার পর গত ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ৩টা ৮ মিনিটের দিকে এমভি আবদুল্লাহ থেকে দস্যুরা নেমে যায়।