স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দোসরদের গণমাধ্যম থেকে অপসারণ, নিয়োগ কমিশন গঠন এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে স্বেচ্ছাচারী নিয়োগ ও মব ভায়োলেন্সের প্রতিবাদ জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী গণমাধ্যম আন্দোলন।
আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে সংগঠনটির আয়োজনে এক ‘গণপ্রতিরোধ’ কর্মসূচিতে এ আহ্বান জানায় সংগঠনটি।
বৈষম্যবিরোধী গণমাধ্যম আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক আমিরুল মোমেনীন মানিকের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রখ্যাত রাষ্ট্রচিন্তক, দার্শনিক ও কবি ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, এই সরকারের প্রথম কাজ হবে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে স্বাধীন গণমাধ্যম ও সম্প্রচার নীতিমালা করা। সরকারের যারা গণ-অভ্যুত্থানের সহযোগীদের বাদ দিয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা ভুল করছেন। মব জাস্টিসের মাধ্যমে ছাত্র তরুণদের বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনবে।
বৈষম্যহীনতার প্রধান লক্ষ্য পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে বদলানো উল্লেখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, যারা বাবরি মসজিদ ভেঙেছে তারাই মাজার ভেঙেছে। মাজার ভাঙা একটি ইসরাইলি প্রকল্প, ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো ইসরায়েল গুড়িয়ে দিয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীরা গণ-অভ্যুত্থানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, এখন দেশগঠনেও ভূমিকা পালন করতে হবে। যারা হাসিনাকে পুনর্বাসনের জন্য ফিরিয়ে আনতে চান তাদেরকে হুঁশিয়ার করেন, এই রাষ্ট্রচিন্তক।
অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আসাদ বিন রনি বলেন, এই সরকারের কাছে শহীদের আমানত রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মূল স্পিরিট অনুযায়ী সরকার পরিচালনা করতে হবে, ফ্যাসিস্ট ও তার দোসরদের অপসারণ ও বিচার করতে হবে। নইলে শহীদের আমানত খেয়ানত করা হবে।
টেলিভিশন উপস্থাপক জহিরুল ইসলাম টুটুলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিম আহমেদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাজমুল হাসান, সিনিয়র সাংবাদিক আহমদ মতিউর রহমান, কবি ও সাংবাদিক শাহীন রেজা, সাংবাদিক নেতা শাহীন হাসনাত, দৈনিক যুগান্তরের বিনোদন সম্পাদক এফ আই দীপু, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিশেষ সংবাদদাতা মানিক মুনতাসীর, কবি জুননু রাইন, নাগরিক যুব ঐক্যে র সভাপতি সাম্যদ শাহ, ছোটদের সময় সম্পাদক মামুন সারওয়ার, লেখক ও সাংবাদিক আবিদ আজম, কবি জব্বার আল নাঈম, দৈনিক ইত্তেফাকের সাংবাদিক কবি পলিয়ার ওয়াহিদ, গণফোরামের নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ মধু, দ্য ডেইলি স্টারের সাংবাদিক ও গবেষক ইমরান মাহফুজ, এবিসির আহ্বায়ক চৌধুরী দৌলত মোহাম্মদ জাফরী, সাংবাদিক আহমদ আল-আমীনসহ আরও অনেকে।
‘গণপ্রতিরোধ’ আয়োজনে অংশ নিয়ে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম বলেন, আমরা বিভিন্ন দাবি জানিয়ে আসছি, এই সরকার তা আমলে নিচ্ছে না। ফ্যাসিবাদকে ধারণ ও লালন করা হচ্ছে। এর অবসান না হলে অচিরেই ডিইউজে ও বিএফইউজে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আমিরুল মোমেনীন মানিক বলেন, আমরা বস্তুনিষ্ঠ ও স্বাধীন সাংবাদিকতার কথা বলি। কিন্তু কার্যত সেটা নেই। গণমাধ্যম থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দালালদের অপসারণ করার আহ্বান জানিয়ে এর পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
সূত্রঃ সমকাল