নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার রয়েল রিসোর্টে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব মামুনুল হককে এক নারীসহ আটক করে পুলিশে খবর দিয়েছে স্থানীয়রা। ওই নারীকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেছেন মামুনুল হক। শনিবার (৩ এপ্রিল) মামুনুল হককে নারীসহ সেখানে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয়রা। বর্তমানে তিনি পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) তবিদুর রহমান। বর্তমানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষে এক নারীসহ মামুনুল হককে আটক করে স্থানীয় জনগণ। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
মামুনুল হকের দাবি, সঙ্গে থাকা নারীর নাম আমিনা তৈয়ব। ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তিনি আরও দাবি করেন, আমিনাকে সঙ্গে নিয়ে রিসোর্টে ঘুরতে গিয়েছিলেন।
ফেসবুকে এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে প্রকাশ হলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেকেই মন্তব্য করছেন, সারাদেশে কউমি মাদ্রাসার ছেলেদের রাস্তায় নামিয়ে নিজে প্রেমিকা নিয়ে ফুর্তি করতে গেছেন মামুনুল।
ভিডিওতে দেখা গেছে, সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনি, পৌরসভা ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুর রহমান রবীনসহ স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতারা মামনুল হককে অবরুদ্ধ করার সময় উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার বিকেল ৩টায় সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর বন্ধ থাকায় তিনি রিসোর্টের ৫০১ নম্বর রুমে উঠেন দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে। এ খবরে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের কিছু নেতাকর্মী বিকেল সাড়ে ৫টায় স্ত্রীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে। খবর পেয়ে সোনারগাঁও থানা পুলিশের একটি টিম রয়েল রিসোর্ট থেকে তাদের উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত নারীর নাম আমিনা তাইয়াবা (২৫)।
তিনি আরো বলেন, ‘ইসলামের শরিয়ত মোতাবেক আমি দ্বিতীয় বিয়ে করি গত দুই বছর আগে। সে আমার দ্বিতীয় স্ত্রী। আমি আল্লাহর কসম কাটতাছি সে আমার স্ত্রী তার প্রমাণ আমি দেখাবো। আমি কোনো অপরাধ করি নাই। কোনো দুর্বলতা আমার নাই।’
এদিকে খবর পেয়ে সোনারগাঁও উপজেলা প্রশাসনের ইউএনও মো: আতিকুল ইসলাম, এসিল্যান্ড গোলাম মোস্তফা মুন্না ও সোনারগাঁও থানা ওসি তদন্ত তবিদুর রহমানসহ কয়েকজন পুলিশ উপস্থিত হন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান জানান, হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মামুনুল হক দু’টি বিয়ে করেছেন। তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে শনিবার সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এসেছিলেন। পরে স্থানীয়রা তাকে আটক করে লাঞ্ছিত করেছেন। স্থানীয়দের সাথে ধস্তাধস্তিতে মামুনুল হকের পরনে থাকা জামাটিও ছিঁড়ে গেছে।’
বিস্তারিত জানতে সোনারগাঁ থানার উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের হেফাজত নেতারা।
সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তবিদুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, এখনই বিস্তারিত বলতে পারছেন না তিনি। তবে মাওলানা মামুনুল হক পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
সূত্রঃ ভোরের কাগজ, নয়া দিগন্ত