মুক্তিপণ দিয়েও প্রাণে বাঁচানো গেল না রাউজানের কলেজছাত্র শিবলী সাদিক হৃদয়কে (২০)। অপহরণের ১৩ দিন পর সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য এলাকার বেতবুনিয়ার শীলছড়ি গহিন পাহাড় থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

এ দিকে মরদেহ শনাক্ত করে ফেরার পথে সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা চারদিক থেকে ঘেরাও করে পুলিশের গাড়িতে হামলা চালায়। এরপর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মামলার প্রধান আসামি উমংচিং মারমাকে (২৬) ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা।

এ সময় পুলিশ সদস্যের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্যও আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন রাউজান থানার ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন (৪৬), উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাদাত হোসেন (৩৫), এসআই কিশোর কুমার (৩২), এএসআই আজিজুল হাকিম (২৯), এসআই কানু লাল (৪০), এএসআই শাহিদুল ইসলাম (৩৮) ও পুলিশের এক পিকআপ ভ্যানচালক। এতে এলাকাজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, হৃদয়ের মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরসহ গণপিটুনিতে এক আসামিকে হত্যা করেছে। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়।

জানা যায়, গত ২৭ আগস্ট অপহরণের দুদিন পর অপহরণকারীরা শিবলীর মাকে ফোন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে সাড়া না পেয়ে গত ৩১ আগস্ট আবার ফোন করে দুই লাখ টাকা চায়। পর দিন ১ সেপ্টেম্বর শিবলীর বাবা দুই লাখ টাকা নিয়ে বান্দরবান জেলা সদরের পূর্বনির্ধারিত জায়গায় গিয়ে দুজন লোকের হাতে টাকা তুলে দেন। টাকা দেওয়ার সময় তাদের ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

কিন্তু হৃদয় আর বাড়ি ফেরেনি। এ ঘটনায় গত ৬ সেপ্টেম্বর রাউজান থানায় অপহরণের মামলা করে হৃদয়ের মা নাহিদা আকতার। পরে মামলার ভিত্তিতে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গতকাল রোববার চট্টগ্রাম নগরীর চাঁদগাঁও এলাকা থেকে অপহরণের ঘটনায় জড়িত অপর তিনজনকে আটক করে র‌্যাব-৭। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ সকালে রাউজান উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের সর্বপূর্বে রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ার একটি পাহাড় থেকে খণ্ডবিখণ্ড দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অতি পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন, রাউজান রাঙ্গুনিয়া সহকারী পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির।

গত ২৭ আগস্ট রাউজানের কদলপুর ইউনিয়নের পঞ্চপাড়ার মুরগি খামার থেকে উপজাতী কিছু বন্ধু কর্তৃক অপহৃত হয় কলেজছাত্র হৃদয়। সে কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের রওশান আলী বাড়ির মুহাম্মদ শফির ছেলে।

সূত্রঃ কালবেলা