রাজধানীর বিভিন্ন রেষ্টুরেন্টে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
রবিবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যার পর থেকে রাত পর্যন্ত ধানমন্ডি, গুলশান, মিরপুর ও উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়। এসময় অগ্নি নিরাপত্তায় বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়ায় ৩৫ জনকে আটক করা হয়।
ধানমন্ডি ও বসুন্ধরা এলাকাতে(ভাটারা) ১৬টি রেস্তোরাঁয় অনিয়ম ও অব্যবস্থপনার অভিযোগে ৩৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক ব্যক্তিরা হলেন ধানমন্ডির হোয়াইট হল নামের রেস্তোরাঁর শামীম হোসেন তুহীন, ম্যারিটেজ ঢাকার খুরশীদ আলম, এ্যারিস্টোক্যাটের সাব্বির হোসেন, আদি কড়াই গোস্তের খালিদ হোসেন, দি লবি লাউঞ্জের মারুফ হোসেন, ইয়ামচা ডিস্ট্রিক্টের পুলক বিশ্বাস, ক্যাফে ডোলচের আশিক তালুকদার, ক্যাফে সাওপাওলোর শাহিন সারোয়ার, ক্যাপিট্যাল লাউঞ্জের রেদুয়ান আহম্মেদ, পার্ক এন্ড স্ট্রার্টের মিজানুর রহমান, খানাজের শরিফুল ইসলাম, ক্যাফে ইউফোরিয়ার আল আমিন, টুইন পার্কের আল আমীন মোস্তফা তালুকদার, স্টার দেশীর মেহেদী হাসান, ডিকে-১৩ এর রাসেল পালমা, বেস্টার প্রের আমিনুল ইসলাম রিফাত, চা-টাইপের সামিত আলম সিয়াম, চয়ন হালদার ও বিবিকিউ’র সুমিত রায়।
ঢাকা মহানগর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাজধানীতে বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন আছে কিনা, নিরাপদ স্থানে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করছে কিনা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটুকু, অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র এবং ঝুঁকির বিষয়টি দেখা হয়। রোববার রাত ১০টা পর্যন্ত আটক করা হয়েছে বিভিন্ন রেস্তোরাঁর ৩৫ কর্মীকে। তাদের মধ্যে কয়েকটি রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপকও রয়েছেন। এছাড়া যেসব রেস্তোরাঁয় ছোটখাট অনিয়ম পাওয়া গেছে তাদের মুচলেকা রেখে সতর্ক করা হয়।’
আজ বিকেলে রাজধানীর ভাটারা এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা না থাকা ও ফুটপাত ব্যবহার করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ব্যবসা পরিচালনা করায় আল্লার দান বিরিয়ানি হাউজের মালিকসহ তিন জনকে আটক করে পুলিশ। এছাড়াও ওই এলাকার রেস্টুরেন্টগুলোকে নিয়ম মানার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।
অগ্নি নিরাপত্তা দেখার দায়িত্ব ডিএমপির না হলেও রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ভবনে লাগা আগুনে ৪৬ জনের প্রাণহানির পর এমন অভিযানের ফলে প্রশাসনের টনক নড়েছে বলে মনে করছেন রাজধানীবাসী। তবে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জোরালো অভিযানেরও দাবি করেছেন। অভিজান চলাকালীন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা এমন দাবির কথা ভোরের কাগজকে জানান।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মহিদ উদ্দিন বলেন, রাজধানীতে বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় অভিযান চালানো হচ্ছে। অগ্নি নিরাপত্তায় অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দেখা গেলেই আমরা সতর্ক করেছি। কিছু কিছু স্থানে আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছি। এখন পর্যন্ত রাজধানীজুড়ে ২৮ জনকে আটক করা হয়েছে। কেবল ধানমন্ডিতেই ১৫টি রেস্তোরাঁয় অনিয়ম ও অব্যবস্থপনার অভিযোগে ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় প্রাণ হারান ৪৬ জন। তাদের মধ্যে ৪৪ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। আহত ১৩ জনের মধ্যে ৬ জনকে ছাড়পত্র দেন চিকিৎসকরা। বাকিদের চিকিৎসায় গঠন করা হয়েছে ১৭ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড।
আগুনের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। এ ঘটনায় শনিবার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় কাচ্চি ভাইয়ের ম্যানেজার ও চায়ের চুমুক রেস্টুরেন্টের মালিকসহ চারজনের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ডে নেয়া চারজন হলেন- কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার জিসান, চায়ের চুমুক রেস্টুরেন্টের মালিক আনোয়ারুল হক, শাকিল আহমেদ রিমন ও গ্রিন কোজি কটেজের ম্যানেজার হামিদুল হক বিপুল।
সূত্রঃ ভোরের কাগজ
Aninda, Sub-Editor