রূপচর্চা সংক্রান্ত কোনও একটি জিনিস কিনতে গেলেই হল। নর্মাল স্কিন, অয়েলি স্কিন, ড্রাই স্কিন এমন হাজার কথা লেখা থাকে। ড্রাই আর অয়লি তো বোঝা গেল। ত্বকে যদি অধিকাংশ সময়ে শুষ্ক ভাব থাকে, তা হল ড্রাই। আবার যদি থাকে তেলতেলে ভাব, তবে সেই ত্বক হল অয়েলি। কিন্তু নর্মাল স্কিন কী?

নর্মাল অর্থাৎ, স্বাভাবিক। কার ত্বক স্বাভাবিক বলা যায়? সেই ত্বকে কি কখনও আসে না তেলতেলে ভাব? নাকি তা কোনও মওসুমেই শুষ্ক দেখায় না? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই স্বাভাবিক ত্বক বলে আসলে কিছুই নেই।

তা হলে ‘নর্মাল স্কিন’ কথাটি এল কোথা থেকে?

বেশ কয়েকটি কারণ আছে কোনও ত্বককে ‘নর্মাল’ বলার পিছনে। এক কথায় বলতে গেলে যে ত্বকের যত্নে বেশি ঝঞ্ঝাট নেই, তা-ই হল নর্মাল স্কিন। এই ধরনের ত্বকের জন্য বিশেষ রূপচর্চার প্রয়োজন হয় না। যে কোনও ধরনের সাবান, ক্রিম, লোশন দিব্যি মানিয়ে ডেতে পারে ত্বকের সাথে। তার প্রভাবে মুখে দাগ, ছোপ কিংবা লাল ভাব যখন তখন দেখা দেয় না।

270210245 4592038087561890 7733902288687503886 n

মডেল: শম্পা জামান

ত্বকে ব্রণ, দাগ, তেলতেলে ভাব— সবই যদি অস্বাভাবিক ধরে নেওয়া হয়, তবে‌ই স্বাভাবিক ত্বকের প্রসঙ্গ আলাদা ভাবে ওঠে।

ভারতের চর্মরোগের একজন চিকিৎসক আফজা মাচিওয়ালার বক্তব্য, বেশির ভাগের ত্বকই সব সময়ে সেই নির্ঝঞ্ঝাট থাকে না। আবহাওয়া, হর্মোন, মানসিক অবস্থা— অনেক কিছুর উপরে নির্ভর করে ত্বকের অবস্থা।

আর এক চর্মরোগ চিকিৎসক মাধুরী অগ্রবাল মনে করেন, ত্বকের ধরন নিয়ে এত বিশ্লেষণ আসে বিপণন কেন্দ্রিক ভাবনা। স্বাভাবিক ত্বক সব সময়ের নয়। বরং যে সময়ে ত্বকে কোনও ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে না, তখন তা থাকে স্বাভাবিক অবস্থায়।

তবে কারও ত্বক অধিকাংশ সময়ে সুস্থ থাকে মানেই যে তার বিশেষ যত্নের প্রয়োজন নেই, এমন নয়। নর্মাল স্কিন কোনও এক পরিস্থিতিতে তেলতেলে হয়ে যেতে পারে। তার জেরে মুখে ব্রণও হয়। ফলে ত্বক যত্নে রাখা সব সময়ই জরুরি।

ত্বকে বয়সের ছাপ এড়াতে করণিয়:

জামান

মডেলঃ শম্পা জামান

সতেজ টানটান ত্বক কে না চায়! তার জন্য নিয়মিত ফল, শাক-সব্জি ও পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়া জরুরি। প্রয়োজন শরীরচর্চারও। কিন্তু এসব করা সত্ত্বেও কি আপনার ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে যাচ্ছে? তাহলে নিশ্চয়ই আপনি রোজকার খাদ্যতালিকায় এমন কিছু খাবার রাখছেন, সেগুলি এই সমস্যার কারণ। ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া রোধ করতে গেলে এই খাবারগুলি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলবেন, ততই ভাল।

প্রসেসড ফুড

অতিরিক্ত গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার খাওয়া ঠিক নয়। প্রায়শই সাদা পাঁউরুটি, কেক, পাস্তা খান কি? এ সব বন্ধ করুন। এমনকি আপনার অতি প্রিয় সাদা চালের ভাতও খাবেন না। বদলে হোল উইট ব্রেড, ব্রাউন রাইস, রাঙা আলু এসব খেতে পারেন। এগুলি ত্বকের পক্ষে উপকারি.

চিনি

চিনি বেশি পরিমাণে খাওয়া মোটেই ভাল নয়। এর ফলে রক্তে হঠাৎই শর্করার মাত্রাও বেড়ে যেতে পারে। কাজেই ত্বকের কোলাজেন ও ইলাস্টিন উৎপাদনে সমস্যা দেখা দেয়। চিনির বদলে গুড়, মধু, খেজুর, নারকেলের চিনি খেতে পারেন।
ভাজাভুজি

তেলেভাজা ও মশলাদার খাবার খেতে কার না ভাল লাগে! কিন্তু বিপত্তি বাঁধায় এই খাবারগুলিই। এই খাবার খেলে শরীরে ফ্রি রাডিক্যাল বেড়ে যায়। ফলে দেখা দেয় ওজন বাড়া ও টাইপ টু ডায়াবিটিসের সমস্যা। তাই ত্বক ভাল রাখতে এসব খাবার থেকে দূরে থাকুন।

কফি

অতিরিক্ত কফি খেতে ভালবাসেন? কিংবা ঘন ক্রিম দেওয়া কফি খাচ্ছেন? তা হলে কিন্তু ত্বকের ক্ষতি হচ্ছে। কফি বাদ দিয়ে বরং বেশি পরিমাণে গ্রিন টি খান। গ্রিন টি-তে থাকা পলিফেনল ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার পাশাপাশি ফ্রি রাডিক্যালকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে। কাজেই ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে না।

তথ্যসূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা