ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারি আজ। স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস।

বঙ্গবন্ধু দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একসাগর রক্তের বিনিময়ে বিজয় অর্জনের পর ১৯৭২ সালের এই দিনে পাকিস্তানে দীর্ঘ কারাবাস শেষে সদ্য স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে ফিরে আসেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীনতাসংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঘটনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, এক অনন্য দিন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পূর্বপরিকল্পিত বাঙালি নিধনযজ্ঞের নীলনকশা ‘অপারেশন সার্চলাইট’ বাস্তবায়ন শুরু করে। লাখ লাখ নিরীহ বাঙালি জনগণের ওপর আক্রমণ ও গণহত্যা চালায় তারা। এই প্রেক্ষাপটে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

এ ঘোষণার মাধ্যমে তিনি সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ লড়াই শুরু করার ডাক দেন। স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে তার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসা থেকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে আটকে রাখেন। এই কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে কাটে বঙ্গবন্ধুর ৯ মাস ১৪ দিনের কঠিন কারাজীবন। কারাগারে বন্দি করা হলেও বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তার নামেই চলে মুক্তিযুদ্ধ।

বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র ও রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হলেও জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের বিজয় পূর্ণতা লাভ করে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গঠনে আমাদের নিরলস প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

যথাযোগ্য মর্যাদায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালনে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ সকাল সাড়ে ৬টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবনসহ সারা দেশে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন। দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক জনসভার আয়োজন।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগ এবং সব সহযোগী সংগঠন কেন্দ্রীয় কমিটির অনুরূপ কর্মসূচির আয়োজন করবে।

সূত্রঃ ইত্তেফাক