জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবুসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব।
বাহিনীটি বলছে, সংবাদ প্রকাশের জেরে নাদিমের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন মাহমুদুল আলম বাবু। এজন্য তাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। তার পরিকল্পনায় সন্ত্রাসীরা নাদিমকে হত্যা করেছে।
শনিবার (১৭ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র্যাব কর্মকর্তা আল মঈন বলেন, ‘বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান বাবুর অপকর্ম নিয়ে কয়েকটি প্রতিবেদন করেন সাংবাদিক নাদিম। সেগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ক্ষিপ্ত হন বাবু। এজন্য নাদিমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাও করেন তিনি। মামলাটি ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল খারিজ করে দেন। মামলা খারিজ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন নাদিম।
এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে নাদিমকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন বাবু। তার পরিকল্পনাতেই সন্ত্রাসীরা নাদিমকে হত্যা করে। এ ঘটনায় হওয়া মামলার প্রধান আসামি বাবুসহ চারজনকে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ ও বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।’
গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন—মনিরুজ্জামান মনির ওরফে মনিরুল, জাকিরুল ইসলাম ও রেজাউল করিম।
- যেভাবে হত্যাকাণ্ড
র্যাব জানায়, ১৪ জুন রাতে পেশাগত দায়িত্ব শেষে এক সহকর্মীসহ মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন নাদিম। বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় পৌঁছলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে বাবুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় কয়েকজন সন্ত্রাসী। তিনি পড়ে যাওয়ার পর পেছন থেকে দৌড়ে এসে যোগ দেয় আরও কয়েকজন। তখন তারা নাদিমকে মারতে-মারতে টেনেহিঁচড়ে পাশের অন্ধকার গলিতে নিয়ে যায়। সেখানে নাদিমকে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। ওই সময় ঘটনাস্থলের পাশে থেকে নেতৃত্ব দেন বাবু। একপর্যায়ে নাদিমের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ১৫ জুন নাদিমের মৃত্যু হয়।
র্যাব কর্মকর্তা আল মঈন জানান, এ ঘটনায় নাদিমের স্ত্রী বাবুকে প্রধান আসামি করে বকশীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। গ্রেপ্তার এড়াতে বাবু পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে তার দূর-সম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে চলে যান।
সেখান থেকে শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তার বিরুদ্ধে আগেও জামালপুরের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। এ ছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া অপর তিনজন বাবুর সন্ত্রাসী গ্রুপের অন্যতম সহযোগী।
Aninda, Sub-Editor