বিকেল ৩টার মধ্যে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময়ের মধ্যে সংসদ ভেঙে দেওয়া না হলে আগামীকাল থেকে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এক ভিডিও বার্তায় এই ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন তিনি অনতিবিলম্বে জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করবেন। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি অভ্যুত্থানের পরেও এখনো ফ্যাসিস্ট হাসিনার জাতীয় সংসদ রয়ে গেছে। আমরা ঘোষণা করছি, আজ দুপুর ৩টার মধ্যে এই ফ্যাসিস্ট হাসিনার সংসদ ভেঙে তা বিলুপ্ত করতে হবে। যদি তা বিলুপ্ত না করা হয় তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য থাকবো।

নাহিদ আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নাম ঘোষণা করেছি। এই সরকারের সামগ্রিক রূপরেখা প্রস্তুত রয়েছে। আমরা খুব শীঘ্রই তা জাতির সামনে প্রকাশ করব। আমরা সমাজে স্থিতিশীলতা, ন্যায়বিচার চাচ্ছি। সেজন্য আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। আর সেসব পদক্ষেপের প্রথম ধাপ হলো জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক আরও বলেন, নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য এবং সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করার জন্য ছাত্র-জনতা প্রস্তুত রয়েছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, নানা জায়গায় লুটপাট, সহিংসতা ও সাম্প্রদায়িক হামলার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। ছাত্র জনতার কাছে বলতে চাই এসব ঘটনা প্রতিহত করতে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে, আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে। কেউ যেন এই আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে না পারে সেদিকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।

এসময় তিনি সবাইকে রাজপথে শান্তিপূর্ণ ও অহিংসভাবে অবস্থান গ্রহণ করে সকল ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করার জন্য সদা সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

গত জুনের শেষ দিকে হাইকোর্ট সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুণর্বহালের ঘোষণা দেওয়ার পর শেখ হাসিনার বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ১৪ জুলাই’র পর থেকে সেই আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে। সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনগণের মধ্যকার সংঘাতে নিহত হন বহু মানুষ।

মূলত তারপর থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থী-জনতা। সেই আন্দোলনের মুখেই সোমবার পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। বিমান বাহিনীর একটি বিমানে চেপে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এই সফরে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ছোটোবোন শেখ রেহানাও রয়েছেন।

সূত্রঃ সমকাল