নীমতলী, চুড়িহাট্টা, বনানীর এফআর টাওয়ারের পর ঢাকার ট্রাজেডির খাতায় নাম লেখালো বেইলিরোড। আগুনের লেলিহান শিখা কেড়ে নিলো ৪৫টি নিরীহ-অসহায় প্রাণ। দগ্ধ হয়ে ২২ জন হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডের সাততলা গ্রীন কোজি কটেজ নামের বহুতল ভবনে আগুন লাগে। ঘড়ির কাটায় সময় তখন পেরিয়েছে রাত সাড়ে নয়টা। প্রতিটি ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট। আর সবকটি রেস্টুরেন্ট ভর্তি ক্রেতা। আগুনের খবর পৌঁছাতে খুব বেশি সময় লাগেনি। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও বের হতে পারেননি অনেকেই।
কারণ, বের হওয়ার একমাত্র পথেই জ্বলন্ত চিতা। বের হওয়ার চেষ্টা করলেই সাক্ষাৎ ঘটবে মৃত্যুর সঙ্গে। নিরুপায় হয়ে ফের চলে যেতে হয় উপরের ফ্লোরে।
আগুনের খবর পেয়েই একে একে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট। প্রাণপণে শুরু হয় কাজ। একদিকে আহুন নেভানো, অন্যদিকে আটকা পড়াদের উদ্ধার। দুই ঘণ্টার নিরন্তর চেষ্টায় আগুন কিছুটা বশে আসলে দমকল কর্মীরা একে একে নামাতে শুরু করেন আটকে পড়াদের। চারদিকে তখর উৎসুক জনতার উপচে পড়া ভীড়। ভীড় নিয়ন্ত্রণে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন পুলিশ, আনসার ও র্যাব সদস্যরা।
প্রাণ বাঁচাতে ছাঁদে ছুটে যাওয়া মানুষদের উদ্ধার করা হয় ল্যাডারের সাহায্যে। এক্ষেত্রে শুরুতেই নারী ও শিশু, এরপর নামিয়ে আনা হয় আটকে পড়া পুরুষ সদস্যদের। এসময় নিজের স্বজনকে বুঝে পেয়ে আবেগে ভাসেন অপেক্ষারত স্বজন। আবার অনেকে কাঁদেন স্বজনের খোঁজ না পেয়ে।
ফায়ার সার্ভিসের দুই ঘণ্টারও বেশি সময়ের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে ঠিকই, তবে ততক্ষণে পুড়ে ছাই অনেক স্বপ্ন।
উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বলছেন, আগুন লাগা ভবনটির প্রতিটি তলার সিঁড়ি ছিলো বড় বড় গ্যাস সিলিন্ডারে ঠাঁসা। যা ব্যবহৃত হতো রেস্টুরেন্টে রান্নার কাজে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ব্যবহৃত সেসব গ্যাস সিলিন্ডারই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে পুরো ঘটনায়।
আগুনের সূত্রপাত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির পুরোপুরি তথ্য কোনো সংস্থা এখনো না দিতে পারলেও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ভবনটির নিজস্ব অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা ছিলো কি না এ বিষয়ে। যদিও সিআইডি বলছে কেমিক্যাল পরীক্ষা করে উদঘাটন করা হবে দুর্ঘটনার পেছনের কারন।
আগুন আশপাশের ভবনে না ছড়লেও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাশের কিছু স্থাপনা।
সূত্রঃ সময় নিউজ
Aninda, Sub-Editor