সারা বিশ্বের মানুষ প্রতিদিন ৩৭০ কোটি কাপ চা পান করেন। কেউ চা খায় ঘুম তাড়াতে, কেউ চা খায় স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে, কেউ চা খায় বন্ধুদের সঙ্গ দিতে আর কেউবা নিছকই অভ্যাসবশতই খেয়ে থাকে। চা পান অনেক মানুষকে বিভিন্ন চিন্তা থেকেও দূরে রাখে। সকালে এক কাপ চা না খেলে দিনটি যেন ভালোই কাটে না।

অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে কাজের ফাঁকে কিংবা অবসর কাটাতে এক কাপ চা না হলে ঠিক মানায় না। শীতে উষ্ণতা পেতে এক কাপ গরম চায়ের তুলনা নেই। মানসিক চাপ হোক বা কাজের চাপ, বিধ্বস্ত লাগলেই চায়ের প্রতি ভরসা করেন অনেকে।

চা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয় এবং চা পান করলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারীতা এবংঅপকারিতা দুটোই হয়।

আজকের পোস্টটি  চায়ে দুধ যোগ করা মানে দুধ চা এর উপকারিতা ও অপকারিতা  নিয়ে।  দুধ চা দুধে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং পটাসিয়াম শরীরের গঠন এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

দুধ চা

মডেল-মাহবুবা রাখী

দুধ চায়ের উপকারিতা

দুধ চা নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে খাওয়া হলে শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এটি প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যে যা আপনাকে শিথিল করতে সাহায্য করে এবং সামগ্রিকভাবে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং রক্ত ​​পরিশোধনকারী এজেন্টে পূর্ণ।

১ .দুধ চা মোটাকরণ এবং ওজন হ্রাস উভয় কাজ এজেন্ট হিসাবে করতে পারে। আপনি যদি ওজন বাড়াতে চান তাহলে দুধ চায়ের ফ্যাট এক সহজ উপায় এবং, অন্যদিকে আপনি যদি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাহলে দুধ চায়ের পলিফেনল এবং ক্যাফিন যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

২.দুধ চা শরীরে শক্তি যোগায়। শরীরের স্ট্রেস রিলিজ হিসাবে কাজ করে। দুধ চা পান করা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এবং ক্ষতিকর র্যাডিক্যাল ক্ষতি প্রতিরোধ করে।

চা পান করার সর্বোত্তম সময় সাধারণত খাওয়ার ২ ঘন্টা পরে। আপনি চা সকালে পান করতে পারেন, তবে খালি পেটে নয় এবং চা বা কফি কোনোটিই আপনার প্রথম খাবার হওয়া উচিত নয়।

৩. চায়ে ক্যাফিন আপনার রেচনতন্ত্রের জন্য দুর্দান্ত এবং গতি প্রবাহ উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। চায়ে উপস্থিত থিওফাইলাইন নামক রাসায়নিক উপাদান আপনার শরীরকে ডিটক্সিফাই করার জন্য, আপনার মন এবং পেশীগুলিকে শান্ত করতে কার্যকর।

দুধ চা

মডেল-মাহবুবা রাখী

দুধ চায়ের অপকারিতা

আপনি যখন খুব বেশি দুধ চা পান করেন, তখন এটি খুব বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। দুধ চা শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে যখন আপনি দুধ এবং চিনির সাথে খান।

১. দুধ চা দিয়ে দিন শুরু করা অ্যাসিডিটির দিকে পরিচালিত করবে। কারণ চায়ে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যাটেচিন এবং এপিকেটেচিন, কিন্তু দুধ যোগ করলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ কমে পানীয়কে প্রদাহ এবং অ্যাসিডিটির উৎস করে তোলে।

২. প্রতিদিন ৩-৪ কাপ দুধ চা পান নেতিবাচক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণ হতে পারে, যেমন- মাথাব্যথা, হজম সমস্যা এবং ঘুমের ব্যাঘাত।

৩. দুধ চা পান করার ফলে শরীরের রক্তচাপ উঠানামা করে। তাই যারা ব্লাড সুগারের রোগী তাদের মোটেও দুধ চা পান করা উচিত নয়। এতে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় এবং শরীর আরো খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অর্থাৎ যারা ডায়াবেটিস এর রোগী তাদের দুধ চা পানে সুগার বেড়ে গিয়ে শরীরে আরো রোগের বাসা বাঁধার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

যাইহোক, অত্যধিক দুধ চা পানের ফলে থিওফাইলিন বা চরম কোষ্ঠকাঠিন্যে হতে পারে কারণ এটি আপনার শরীরকে শুষ্ক এবং ডিহাইড্রেট করে।