“তোমার হাসিতে হাজার ফুল ফুটে যায়
তুমি না আসলে হাসবে কে আমার বাগিচায় ?” ফুয়াদ এর একটি গানের কলিতে বুঝিয়ে দেয় একটি মোহনীয় হাসির টান, ক্ষমতা ও ভালোবাসা কতটুকু।
সুখ প্রকাশের অন্যতম উপাদান হচ্ছে হাসি। গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বজুড়ে হাসি একটি অন্যতম যোগাযোগের মাধ্যম। হাসি এক ধরনের মুখমণ্ডলীয় বহিঃপ্রকাশ, যা সচরাচর মুখের নমনীয় পেশিকে দুপাশে প্রসারিত করার মাধ্যমে অর্জিত হয়।
মানুষের সুখ, মজা, আনন্দ-এসবের জন্যই হাসির প্রচলন বিদ্যমান। এ ছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, ভেংচি কাটা, রাগ, ভয় ইত্যাদি প্রদর্শনেও হাসির ব্যবহার হয়ে থাকে। হাসি মানুষের শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তির মাধ্যমে সুস্থ রাখতে ভীষণ কার্যকরী। হাসি মানুষের শারীরিক গঠনে সহায়তা করে।
চারদিকে যেভাবে স্ট্রেস বাড়ছে, এ থেকে মুক্তির অন্যতম উপায় হাসি। খেয়াল করে দেখবেন, আপনি হাসলে আপনার সঙ্গে বা পাশে থাকা মানুষ বা মানুষগুলোও হাসতে থাকে। হাসি খুব দ্রুত একজনকে স্পর্শ করতে পারে। আপনি যতক্ষণ হাসতে থাকবেন, ততক্ষণ এবং তারও বেশি সময় ধরে হাসির রেশে আপনার চিন্তা বা হতাশা কেটে যাবে। হাসিখুশি মুখ দেখতেও ভালো লাগে। তাই প্রাণখুলে হাসুন এবং অন্যকেও হাসান।
যেকোনো সমস্যায় প্রাণখোলা হাসির চেয়ে ভালো ও কার্যকর কিছু আর দ্বিতীয়টি নেই। তবে এটা শুধু কথার কথাই নয়, বরং যথেষ্ট বিজ্ঞানসম্মত। আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় হাসি-কৌতুক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। শুধু শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যেই নয়, সামাজিক ক্ষেত্রেও হাসির সুফল রয়েছে।
সব সমস্যার সমাধান হাসি। এই ধারণার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে ‘লাফটার ইয়োগা’ বা ‘হাস্যযোগ’। হাস্যযোগে সাধারণত সমবেতভাবে দীর্ঘক্ষণ ধরে হাসা হয়। তবে স্বতঃস্ফূর্ত হাসি অত্যন্ত কার্যকরভাবে শারীরবৃত্তীয় ও মানসিক উপকার করে। তাই হাসি-খুশি থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে আমাদের। হাসি কিন্তু বেশ সংক্রামক। পাশের মানুষটির উচ্ছল হাসি আমাদেরও হাসায়। কৌতুকে মেতে উঠে সবাই মিলে হাসিখুশি সময় কাটালে তা শরীর ও মনকে চনমনে করে তোলে। একা থাকলেও কোনো কমেডি মুভি বা বইকে সঙ্গে করে হাসা যায় প্রাণ খুলে।
হাসির তাৎক্ষণিক উপকারিতার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি উপকারিতাও বিদ্যমান। যেমন-
-
মানসিক চাপমুক্ত করে :
হাসলে মানসিক চাপ কমে যায়। হাসির সময় আমাদের শরীরে অ্যান্ডোরফিন হরমোনের ক্ষরণ হয়, যা স্ট্রেস হরমোন নামে পরিচিত কর্টিসল হরমোনের কার্যক্ষমতাকে কমিয়ে ফেলে। এতে মানসিক চাপ দূর হয় এবং আমাদের হারানো আত্মবিশ্বাসও ফিরে আসে। সুতরাং প্রাণ খুলে হাসুন।
-
বন্ধন মজবুত করে :
যদি দুজন মানুষ একসঙ্গে প্রাণ খুলে হাসতে পারেন, তাহলে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য হওয়ার আশঙ্কা বেশ কম। হাসি দলীয় বন্ধন (টিমওয়ার্ক) মজবুত করে।
-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় :
হাসি শরীরে স্ট্রেস হরমোনের উৎপাদন কমিয়ে দেয় এবং রোগ প্রতিরোধক শ্বেত রক্তকণিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করে। ফলাফল মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
-
অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ায় :
হাসার কারণে ফুসফুস প্রসারিত হয়। ফলে আমাদের শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। রক্তের মাধ্যমে ফুসফুসে বিশুদ্ধ অক্সিজেন প্রবেশ করে, যা পরবর্তী সময়ে আমাদের শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে নানা রোগের প্রকোপ কমে যায়।
-
রাগ কমাতে সাহায্য করে :
হাসির মতো কোনো কিছুই এত দ্রুত রাগ প্রশমিত করতে সাহায্য করে না। কোনো সমস্যার মজার দিকটায় নজর দিলে অনেক সময় সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যায়। তিক্ততা বা বিরক্তির সঙ্গে কোনো ধরনের সংঘর্ষে না জড়িয়ে সমস্যার সমাধান করা যায়।
“তোমার হাসিতে হাজার ফুল ফুটে যায়
তুমি না আসলে হাসবে কে আমার বাগিচায় ?
তোমার জন্য বেদনার গান লিখেছি
বুকে সব স্বৃতি গুলো এক করে সুর বেধেছিমনে একটাই সুখ, আমাকেও খুব ভালোবাসো তুমি তাই
ভালোবাসি তোমায় এতটা ।।”
-
রক্তচাপ কমায় :
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, হাসার সময় শরীরে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়, রক্তনালিগুলো প্রসারিত হতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শিরা-ধমনির ওপর চাপ কম পড়ে। আর এর ফলে উচ্চরক্তচাপ কমায়। তাই রক্তচাপ কমাতে প্রফুল্ল থাকুন এবং প্রচুর হাসুন।
-
হৃদযন্ত্র ভালো রাখে
আপনি যখন হাসেন তখন আপনার শরীর রক্ত প্রবাহিত হয় এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। রক্ত সঞ্চালনের বৃদ্ধির জন্য রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমে এবং কার্ডিওভাসকুলারের উন্নতিতে এটি হৃদপিণ্ডকে সাহায্য করে। হাসি ধমনীর ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে কাজ করে। হৃদরোগের সমস্যা কমায়, রক্তনালীর নমনীয়তা এবং ধমনীর সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। যে কারণে আপনার হৃদযন্ত্র সক্ষমতার সঙ্গে রক্ত পাম্প করতে পারে।
জীবন কাউকে শতভাগ দেয় না। তাই তো সব না পাওয়া ও বেদনার ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়েও বরং এই ব্রতই করা যায়—হাসতে হবে প্রাণ খুলে। জীবন সুন্দর; হাসিখুশি থাকার জন্য এক জীবনে অনেক কিছু আছে।
“চশমা যখন দ্বিতীয় নেত্র”
“নেত্র তাহার কাজল কালো, টানা টানা আখিঁ, মায়াবীনি তনয়াটারে চোখের তারায় রাখি । দৃষ্টিতে প্রেম ঝরে, হাসিতে স্নিগ্ধতা, যতই দেখি তারে, ঘিরে ধরে মুগ্ধতা । ” মায়াবী চোখ নিয়ে এরকম আরো অনেক কবিতা ও গান আছে যা প্রকাশ করে যে মানুষের চোখ তার মনের কথা বলে । চোখ যেন মনের আয়না । যার...
হিজাবে মায়াবী বাঙালী নারী
হিজাব, ধর্মীয় দিক থেকে হোক আর ফ্যাশন হোক, একজন বাঙালী নারীকে বেশ সুন্দর ও মায়াবী লাগে। আজ থেকে ১৫-২০ বছর আগেও বাংলাদেশের হিজাব পরা নারীরা ছিলেন ফ্যাশন থেকে বহুদূরে। ফ্যাশন ও হিজাব যেন ছিল দু’টি আলাদা আলাদা পৃথিবীর বস্তু; যার একটির সাথে অন্যটির দেখা হওয়া ছিল অসম্ভব।...
দুধ চা: স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না খারাপ
সারা বিশ্বের মানুষ প্রতিদিন ৩৭০ কোটি কাপ চা পান করেন। কেউ চা খায় ঘুম তাড়াতে, কেউ চা খায় স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে, কেউ চা খায় বন্ধুদের সঙ্গ দিতে আর কেউবা নিছকই অভ্যাসবশতই খেয়ে থাকে। চা পান অনেক মানুষকে বিভিন্ন চিন্তা থেকেও দূরে রাখে। সকালে এক কাপ চা না খেলে দিনটি যেন ভালোই...