বছরের শুরু থেকেই সরকার ও ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, রমজানে বাজারে সবকিছুর দাম স্থিতিশীল থাকবে। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এফবিসিসিআই ও ভোক্তা অধিদপ্তরকে একাধিক বৈঠকও করতে দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের নিয়ে।
এসব বৈঠক থেকে আশ্বাসও এসেছে, কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না পবিত্র রমজান সামনে রেখে। কিন্তু কেউই কথা রাখেননি। রমজানের প্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম গত এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে। শবে বরাতের পর থেকে সব ধরনের ডালের দাম কেজিতে গড়ে ১০ টাকারও বেশি বেড়েছে।
গত দুই দিনে মুরগির দাম প্রতি কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। খেজুরের দাম তো আকাশছোঁয়া। ইফতারসামগ্রী তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন দ্রব্যের দাম হাঁকা হচ্ছে ইচ্ছেমতো। কেজিপ্রতি বেসন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছরের মধ্যে এবারই রোজার বাজারে ছয়টি পণ্যের দাম অনেক বেশি। এগুলো হচ্ছেÑ চিনি, খেজুর, ছোলা, পেঁয়াজ, রসুন ও অ্যাংকর ডাল। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে রোজার আগে বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ছিল ৭৮ থেকে ৮০ টাকা। এ বছর চিনির কেজি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। তাতে এক বছরে চিনিতে খরচ বেড়েছে সর্বনিম্ন ৬০ থেকে সর্বোচ্চ ৬৭ টাকা।
টিসিবির হিসাবে, ২০২১ সালে রোজার আগে বাজারে ছোলার দাম ছিল কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। এ বছর দাম বেড়ে হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। অর্থাৎ দুই বছরের ব্যবধানে ছোলার দাম বেড়েছে কেজিতে ২৫ থেকে ৪০ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। গত বছর এ দাম ছিল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। আর ২০২২ সালে রমজানের আগে অ্যাংকর ডালের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। তবে টিসিবির মূল্যের চেয়ে বেশি দামে এসব পণ্য কিনতে হচ্ছে বাজার থেকে।
কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, চালের দাম আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। বর্তমানে নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৪ থেকে ৭৮ টাকা কেজি দরে, মিনিকেট ৬৬ থেকে ৬৮ টাকা দরে, ব্রি২৮ বা মোটা চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকায়, স্বর্ণা ৪৭ থেকে ৪৮ টাকায়। গত বছর রমজানের সময় মোটা চালের দাম ছিল ৪৬ থেকে ৫০ টাকা; ২০২২ সালের রমজানের সময় ছিল কেজিপ্রতি ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। গত বছরের হিসেবে মোটা চালের দাম ৪ থেকে ৬ টাকা বেড়েছে।
তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চিনির দাম। প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়। অথচ গত বছর চিনির কেজি ছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। ২০২২ সালে চিনির কেজি ছিল ৭৮ থেকে ৮০ টাকা। গত বছরের তুলনায় চিনির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। বড় দানার মসুর ডালের দাম কেজিপ্রতি ১২০ টাকা। গত বছর যা ছিল ৯৫ থেকে ১০০ টাকা। অর্থাৎ এক বছরে দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। আবার ছোট দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে।
বর্তমানে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে। গত বছর ছোলার কেজি ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। ২০২২ সালে ছোলার কেজি ছিল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। গত বছরের তুলনায় ছোলার দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। খেসারির ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি দরে। এক মাস আগে খেসারির দাম ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকা। মাসের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ টাকা। মাষকলাই ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে। অথচ এক মাস আগে এই ডালের দাম ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা কেজি। এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিতে ৩৫ টাকা।
রমজানের আগে ভারত ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো পেঁয়াজ আসেনি। বাজারে দামও কমেনি। গতকাল সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৯০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে। গত বছর পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। ২০২২ সালে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। গত বছরের তুলনায় কেজিতে বেড়েছে ৫৫ থেকে ৮০ টাকা। ২০২২ সালে দেশি রসুনের দাম ছিল প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ২০২৩ সালে যা ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এবার এর দাম ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা।
গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে। গত বছর এর দাম ছিল ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা। ২০২২ সালে দাম ছিল ৬৬০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি। গরুর মাংস গত বছরের চেয়ে প্রায় ৩০ টাকা বেড়েছে কেজিতে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়।
বাজারে বর্তমানে বড় আকারের লেবু বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। ছোট আকারের লেবু ৪০ থেকে ৫০ টাকা। চিকেন জুসের কর্ণধার আরমান ভুইয়া জানান, গতকাল তিনি ২ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে ১০০ লেবু কিনেছেন।
বছরের ব্যবধানে কম, মাসের ব্যবধানে বেশি
বছরের ব্যবধানে কিছু পণ্যের দাম কমেছে। তবে মাসের ব্যবধানে আবার বেড়ে গেছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে সয়াবিন তেল, ব্রয়লার মুরগি, খোলা আটা ইত্যাদি।
গত দুই বছরের তুলনার এবার কমেছে সয়াবিন তেলের দাম। ২০২২ সালে বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১৫৮ থেকে ১৬৫ টাকা, গত বছর যা ছিল ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা। বর্তমানে এক লিটার সয়াবিন ১৬৩ থেকে ১৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। গত বছর এর দাম ছিল ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। ২০২২ সালে ছিল ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা কেজি। গত বছরের চেয়ে আটার দাম কেজিতে কমেছে ১৩ টাকা। দুই কেজির প্যাকেটজাত আটার দাম বর্তমানে ২১০ টাকা।
গত বছরের চেয়ে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে কেজিতে ৫০ টাকা। গত বছর এক কেজি ব্রয়লারের দাম ছিল ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা। ২০২২ সালে দাম ছিল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। তবে এক মাসের ব্যবধানে ব্রয়লারের দাম কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে এর দাম প্রতি কেজি ২৩০ টাকা। গত জানুয়ারির শেষের দিকে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা।
গত বছর ফার্মের মুরগির লাল ডিম বিক্রি হয়েছিল ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা হালিতে। বর্তমানে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৩ থেকে ৪৫ টাকায়।
রংপুরে নিত্যপণ্যের বাজার ঊর্ধ্বমুখী
গতকাল বিকালে রংপুরের বৃহৎ সিটি বাজারে কেজিপ্রতি সজনে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, মরিচ ৮০ টাকা দরে এবং প্রতি পিস লাউ ৬০ টাকা, চালকুমড়া ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ১০ টাকা, ফুলকপি ১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া কেজিপ্রতি পেঁয়াজ ১০০ টাকা, আদা ২০০ টাকা, রসুন (দেশি) ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি বেগুন ৮০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, (বড়) প্রতি হালি লেবু ৩৫ টাকা এবং শসা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এদিকে খেজুরের মধ্যে বস্তা খেজুর ২২০ টাকা, ডাবাস ৪৫০ টাকা, তিউনিসিয়া ৫৫০ টাকা, আজওয়া খেজুর মানভেদে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
নগরীর স্টেশন এলাকার ট্রাকচালক শাকিল হোসেন বলেন, ‘রমজানে উপার্জন কমে যায়। অন্যদিকে বাজার ঊর্ধ্বমুখী। মাছ-মাংসের বাজার তো অনেক চড়া। সবজিরও দাম নাগালের বাইরে চলে গেছে। অথচ রংপুরের সবজিই সারা বাংলাদেশে পাঠানো হয়। এমন অবস্থা চললে আমরা কীভাবে সেহরি, ইফতার করব?’
বাহার কাছনা এলাকার শামীম মিয়া বলেন, ‘রমজানের আগেই অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বাজার মনিটরিংয়ের দিকে কারও নজর নেই।’
স্টেশন এলাকার রিকশাচালক সেলিম মিয়া বলেন, ‘হামার রোজগার কমি গেইচে। সউগ জিনিষের যে দাম, বাচ্চা-কাচ্চাক নিয়া যে খ্যায়া বাঁচি থাকমো সেই উপায় নাই।’
সিটি বাজারের ব্যবসায়ী মাসুদ মিয়া বলেন, ‘রমজানের আগে থেকেই কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। বেশি দামে কিনেছি, তাই বেশি দামেই বেচতে হচ্ছে। ডিলার পর্যায়ে পণ্যের দাম কমলে আমরাও কম দামে বেচতে পারব।’
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। বিশেষ করে রমজানকে ঘিরে মনিটরিং বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া রমজানে যেন কেউ কষ্টে না থাকে সে লক্ষ্যে সরকারি নানা সহায়তা প্রদান করা হবে।’
চট্টগ্রামে রোজার এক দিন আগেই বেড়েছে সবজির দাম
চট্টগ্রামে গত রবিবার প্রতি কেজি শসা বিক্রি হয়েছিল ৭০ টাকায়। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে গতকাল সেই শসা প্রতি কেজির দর হাঁকা হয়েছে ৮০ টাকা। শুধু শসা নয়, রমজান সামনে রেখে রোজার এক দিন আগে বেশিরভাগ সবজির দামও বেড়েছে। রবিবার যে লেবু বিক্রি হয়েছে প্রতিটি ১০ টাকায়, তা গতকাল বিক্রি হয়েছে ১৫ টাকায়।
রমজান সামনে রেখে সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। কাজির দেউড়ি বাজারে বাজার করতে আসা জসিম উদ্দিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের কাছে আমরা সাধারণ মানুষ জিম্মি। তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, কমছে। ভোগ্যপণ্যের পর এখন রমজান সামনে রেখে সবজির দামও বেড়ে গেছে। এভাবে সবকিছুর দাম বাড়লে আমরা সাধারণ মানুষ খাব কী?’
নগরীর কাজির দেউড়ি ও চৌমুহনী কাঁচাবাজারে ২০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি খিরা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, ৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি পটোল ১১০ টাকায়, বেগুন ৬০ টাকায়, ঝিঙ্গা ১২০ টাকায়, করলা ১২০ টাকায়, ঢ্যাঁড়শ ১০০ টাকায়, বরবটি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হঠাৎ সবজির দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কাজির দেউড়ি বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. দিদার বলেন, ‘পাইকারিতে সবজির দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে বাজারে সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। রমজানে সবজির দাম খুব বেশি বাড়বে না।’
চট্টগ্রামে রমজান সামনে রেখে বাজারে মাছ, মুরগি, মাংসের দামও বাড়ছে। রমজান সামনে রেখে দেশি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকা। এক দিন আগে প্রতি কেজি দেশি মুরগি বিক্রি হয়েছিল ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়। সেই দেশি মুরগি গতকাল বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৬২০ টাকায়। অন্যদিকে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকায়। অথচ এক দিন আগেও প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩২০ টাকায়। ২০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। খাসির মাংসের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকায়। রবিবার প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায়। গতকাল সেই খাসির মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ১০০ টাকায়। বেড়েছে সামুদ্রিক মাছের দামও। অবশ্য মিঠাপানির মাছের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
ব্যবস্থা নিতে মাঠপুলিশকে নির্দেশ
রমজান সামনে রেখে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার পুলিশ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভা থেকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে সব মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপাররা অংশ নেন। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স প্রান্তে ডিআইজি (অপারেশনস) মো. আনোয়ার হোসেন, ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) জয়দেব কুমার ভদ্র এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘রোজার সময় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পণ্য মজুদ করে বা কৃত্রিমভাবে সংকট তৈরি করে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দেয়। মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’ প্রয়োজনীয় অভিযান পরিচালনা করারও নির্দেশ দেন তিনি।
এ ছাড়া গতকাল ডিএমপির সদর দপ্তরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রমজানে ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত আলোচনা করেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। এ সময় তিনি বলেন, ‘রমজানে খাদ্যে ভেজালকারী, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ডিএমপি। প্রয়োজনে সব সংস্থার সমন্বয়ে ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্টেটের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালানো হবে।
সূত্রঃ প্রতিদিনের বাংলাদেশ