গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা হয়েছে। এতে অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অভিযোগ, গাড়ি পার্কিংয়ে নিষেধ করায় মোক্তারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যানের উস্কানিতে এই হামলা হয়েছে। চেষ্টা করা হয়েছে তাকে লাঞ্ছিত করার। তবে এই অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ বলছে, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকের ওই হামলায় আহতরা হলেন, ইউএনওর গাড়িচালক রুবেল হোসেন, আনসার সদস্য মো. আকরাম ও রেজোয়ান, বিআরডিবি অফিসের কর্মচারী লিটন আহমেদ, প্রকৌশলী অফিসের কর্মচারী রাসেল মিয়া ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের প্রোগ্রামার উজ্জ্বল কুমার শীল।
আহত ব্যক্তি ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শহীদ ময়েজ উদ্দিনের ৩৯তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে কালীগঞ্জ আরআরএন পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে দুপুরে স্মরণসভার আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন। মোক্তারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল নিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরের ভেতরে জড়ো হন। এ সময়ে জাতীয় কন্যা দিবস উপলক্ষে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে প্রথমে উপজেলা পরিষদে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের গাড়ি চত্বরের বাইরে রাখার অনুরোধ করেন। কিন্তু এতে তারা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তখন ইউএনও আজিজুর রহমান এসে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতিকে গাড়ি বাইরে রাখার অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তারা বাকবিতণ্ডায় জড়ান।
আওয়ামী লীগ নেতার অনুসারীরা তখন ইউএনওসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘিরে ফেলে। একপর্যায়ে ইউএনওর ওপর হামলা চালায় এবং শার্ট ধরে টেনেহেঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আনসার সদস্য ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইউএনওকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে তাদের ওপরও হামলা হয়। এতে আনসারসহ ৬ জন আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজিত নেতাকর্মীরা ইউএনও অফিস এবং উপজেলা নির্বাচন অফিসে ইটপাটকেল মারলে কয়েকটি জানালার গ্লাস ভেঙে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আজিজুর রহমান বলেন, ‘নিষেধ করার পরও চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে জটলার সৃষ্টি করে অটোরিকশা-মোটরসাইকেল রাখে। তাদের গাড়ি চত্বরের বাইরের খোলা স্থানে রাখার অনুরোধ করার পর চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হন। সে সময় তার অনুসারীরা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা চালায়। এ ছাড়া ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে দপ্তরের জানালা ভাঙচুর করে। তারা আমাকেও লাঞ্ছিত বা হামলার চেষ্টা করলে কর্মকর্তারা আমাকে ঘিরে ধরে গেটের ভেতরে নিয়ে গিয়ে রক্ষা করে।’
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মোক্তারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনকে একাধিকবার ফোন দিলেও ধরেননি।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফায়েজুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বিষয়টি নিয়ে এখনও থানায় কোনো অভিযোগ হয়নি।
সূত্রঃ প্রতিদিনের বাংলাদেশ
Aninda, Sub-Editor