কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ইউপি কার্যালয়ে চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নঈম উদ্দিন সেন্টুকে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।

সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদে নিজ কার্যালয়ে তার ওপর গুলি চালানো হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত এলাকাবাসী বেশ কয়েকটি বাড়িতে লুটপাট এবং আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার সকালে অন্য দিনের মতো বাড়ি থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদে যান চেয়ারম্যান নঈম উদ্দিন সেন্টু। পরে তিনি নিজ কার্যালয়ে বসে দাপ্তরিক কাজকর্ম করছিলেন।

এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন গ্রাম পুলিশ এবং দুজন ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তারা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের পেছনের জানালা দিয়ে চার পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা। এতে নিজ কার্যালয়েই মারা যান চেয়ারম্যান নঈম উদ্দিন সেন্টু।

নিহত চেয়ারম্যানের ছেলে কনক ও পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, চেয়ারম্যানের কারো সঙ্গে শত্রুতা ছিল না। তবে সরকার পতনের পর স্থানীয় একটি পক্ষ চেয়ারম্যানকে হত্যাসহ নানা ধরনের হুমকি দিয়ে আসছিল।

এদিকে, চেয়ারম্যানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত এলাকাবাসী ও চেয়ারম্যানের লোকজন বেশ কয়েকটি বাড়িতে লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দেয়। গণমাধ্যম কর্মীরা ছবি তুলতে গেলে তাদের উপর চড়াও হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, বিএনপির রাজনীতি করলেও বর্তমানে তিনি রাজনীতিতে অনেকটা নিস্ক্রিয় ছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন। বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তার সখ্যতা ছিল।

দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা বলেন, চেয়ারম্যান নঈম উদ্দিন একসময় উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিএনপি দলীয় রাজনীতি করেন না।

হত্যাকান্ডের বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি মাহাবুবুর রহমান জানান, ফিলিপনগর ইউপি চেয়ারম্যান নঈম উদ্দিন সেন্টুকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চলছে। নিহত চেয়ারম্যানের লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে কারা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তা তিনি নিশ্চিত হতে পারেননি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

উল্লেখ্য, নঈম উদ্দিন সেন্টু এক সময় বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ সময় তাকে আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে ওঠাবসা করতে দেখা গেছে।

হত্যাকান্ডের ঘটনায় বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন থাকলেও এলাকার সাধারন মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় রয়েছে।

সূত্রঃ মানবজমিন